সূরা ইখলাস, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সূরা ইখলাস এক-তৃতীয়াংশ কুরআনের সমান
[কোরআনটাইম] সূরা ইখলাস
আমরা সম্ভবত নামাজের মধ্যে সূরা ইখলাসই সবচেয়ে বেশী পড়ে থাকি।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সূরা ইখলাস এক-তৃতীয়াংশ কুরআনের সমান’। ‘নিশ্চয় সূরা ইখলাসের ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে’।
আসুন, জেনে নেই এই প্রিয় সূরাটির মর্মাথ:-
‘ক্বুল্ হু ওয়াল্লাহু আহাদ্’ (বলুন, তিনিই আল্লাহ্, এক-অদ্বিতীয়)।
‘আহাদ’- (আল্লাহ এক)। ইসলাম ব্যতীত অন্য সবগুলো ধর্মের লোকেরা আল্লাহর শরীক বা অংশীদার সাব্যস্ত করেছে। যেমন ইহুদীগণ ওযায়েরকে এবং খৃষ্টানগণ ঈসাকে ‘আল্লাহর পুত্র’ বলেছে (সূরা তওবা ৯/৩০)। ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী খৃষ্টানগণ আল্লাহকে ‘তিন উপাস্যের একজন’ বলেছে (সূরা মায়েদাহ ৫/৭৩)। অন্যদিকে ভারতীয় বহু ঈশ্বরবাদীদের তো ভগবানের কোন সংখ্যাসীমাই নেই। এইসব বে-দলীল ও কাল্পনিক কথার জবাব অত্র আয়াতে আল্লাহ ছোট্ট একটি শব্দ দিয়েছেন- ‘আহাদ’ অর্থাৎ আল্লাহ ‘এক’। ‘ওয়াহেদ’ ও ‘আহাদ’ দু’টি শব্দেরই অর্থ ‘এক’। তবে পার্থক্য এই যে, ওয়াহেদ-এর দ্বিতীয় অর্থ রয়েছে। কিন্তু আহাদ-এর কোন দ্বিতীয় অর্থ নেই। আল্লাহ লা-শারীক। আল্লাহর ‘আহাদ’ নামটি কুরআনের অন্য কোথাও নেই। কেবল এ সূরাতেই রয়েছে। এতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর একক হুকুমেই সৃষ্টিজগত পরিচালিত হয়। এতে অন্যের কোন অংশীদারিত্ব নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়।
‘আল্লহুস্ স্বমাদ’ (আল্লাহ্ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী)।
‘স্বমাদ’- আল্লাহ মুখাপেক্ষীহীন। যিনি সকলের থেকে মুখাপেক্ষীহীন। অথচ সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
‘লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ’ (তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয়নি)।
তাঁর কোন সন্তান নেই বা পিতা নেই বা কোন স্ত্রী নেই (ইবনে কাসীর)। তিনি কারো উত্তরাধিকারী নন এবং কেউ তাঁর উত্তরাধিকারী নয়। স্বয়ং আল্লাহ নিজেই তাঁর পরিচয় দিয়ে বলেন, “তিনিই আসমান ও যমীনের প্রথম সৃষ্টিকর্তা। কিভাবে তাঁর পুত্র সন্তান হবে? অথচ তাঁর কোন স্ত্রী নেই। আর তিনিই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সকল বিষয়ে অবহিত” (সূরা আন‘আম ৬/১০১)। ‘এবং তিনি কারু জন্মিত নন’ বলার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তিনিই আদি সৃষ্টিকর্তা। তাঁর পূর্বে কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না।
‘ওয়া লাম ইয়া ক্বুল্ লাহু কুফুওয়ান আহাদ’ (এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নেই)।
অর্থাৎ সত্তা ও গুণাবলীতে আল্লাহর সাথে তুলনীয় কিছুই নেই। আল্লাহ নিজেই বলেন, “তাঁর মত কোন কিছুই নেই।’’ (সূরা শুরা/১১)
স্বীয় সত্তা ও গুণাবলীতে আল্লাহ একক ও তুলনাহীন- এই নির্ভেজাল তাওহীদ বিশ্বাসকে যাবতীয় শিরকের কালিমা হ’তে মুক্ত রাখার আহবানই হ’ল সূরা ইখলাসের সারকথা।